উত্তর: পিঁপড়েরা আমাদের মতই। তাদেরও আমাদের মতো শর্করা, আমিষ, তেল, ভিটামিন ইত্যাদি লাগে। আপনি যখন দেখেন একটা মরা তেলাপোকাকে পিঁপড়েরা নিয়ে যাচ্ছে, এটা আপনার ঘর পরিষ্কার করার জন্য না, ওদের পেট ভরানোর জন্য! তবে শুধু নিজেদের নয়। এরা সামাজিক প্রাণী। এরা কলোনীর ধাঁচের বাসা বানিয়ে সেখানে থাকে। বাসায় ছোট বাচ্চা পিঁপড়ে থাকে, অসুস্থ পিঁপড়ে থাকে, রাণী পিঁপড়ে থাকে। কর্মী পিঁপড়েদের যখন আমরা ইতস্তত ঘুরতে দেখি সেটা না যতটা নিজের পেট ভরানোর তাগিদে তারচেয়ে বেশি ঘরের পিঁপড়েদের জন্য।
তো পিঁপড়েরা যখন কলোনিতে খাবার নিয়ে যায় তখন চিন্তা করে কোনটা নেওয়া সহজ, কোনটা নিলে লাভ বেশি। যেমন একটা দানা ভাতে যতটা শর্করা থাকে তার চেয়ে বেশি থাকে সমপরিমাণ চিনিতে। যত বেশি মিষ্টি তত বেশি শক্তি তত বেশি লাভ।
এবার আসি, বয়ে নেওয়ার ব্যাপারে। পিঁপড়েরা তাদের ভরের ১০-৫০ গুণ বেশি ভারী জিনিস বহন করতে পারে। খাবার জিনিসটা কঠিন হলে তারা দাঁত দিয়ে কামড়ে, ঘাড়ে করে নিয়ে যায় ঘরে। কিন্তু যদি তরল হয়, যেমন ফুলের রস কিংবা চিনিপানি তবে তারা সেটা গিলে পাকস্থলি ভরে ফেলে কলোনীতে ফিরে যায়। ফিরে তরলটা উগড়ে অন্যদের খাইয়ে দেয়।
এবার আসি মধুর ব্যাপারে। মধু যেহেতু শক্তির ভালো উৎস, সুক্রোজ থাকায়, পিঁপড়ে মধু খাবেই। তবে সমস্যা হচ্ছে ঘন মধু যাতে কিনা ২০% এর কম পানি থাকে, খাওয়া পিঁপড়েদের জন্য ভারী সমস্যার। খাবে কী, বরং অত ঘন মধুতে ওরা আটকে যায়।
তবে পিঁপড়েরা অত সহজে হাল ছেড়ে দেয় না। মধুর একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ১৮.৮ শতাংশের চেয়ে কম আর্দ্রতার মধু বাতাস থেকে পানি শোষণ করে। যেই মধু একটু পাতলা হয় সেই পিঁপড়েরা এসে মধুর কিনার থেকে লঘু মধু পেটে করে চুরি করে নিয়ে যায়। আপনি যদি মধু চুরি দৃঢ় হাতে প্রতিরোধ করতে চান তো মধু সাবধানে নেবেন যেন বোতলের গায়ে না লাগে আর মধু নেবার পরে বোতল ভালোভাবে মুছে রাখবেন।
মধু যেহেতু শক্তির ভালো উৎস, সুক্রোজ থাকায়, পিঁপড়ে মধু খাবেই।