আজকে আমরা কালোজিরা ফুলের মধু নিয়ে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ্। কালোজিরা ফুলের মধু কি? কিভাবে তৈরি হয়? এর বৈশিষ্ট্য কি? কিভাবে চেনবো? কোথায় পাওয়া যায়? অন্য মধুর চেয়ে কালোজিরা ফুলের মধুর গুণাগুণ বেশি না কম? ইত্যাদি বিষয়ে জানবো ইনশাআল্লাহ্।
কোনটি
খাঁটি মধু এবং কোনটি ভেজাল মধু এইটা বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই মধুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকতেই হবে। না হলে কিন্তু আপনি আসল নকল মধু বুঝতে পারবেন না। আজকে আমি আপনাদেরকে কালোজিরা ফুলের মধুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত বলার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ্। এই বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানলে আপনাকে কেউ আর
কালোজিরা ফুলের মধু বলে ভেজাল মধু দিতে পারবে না
ইনশাআল্লাহ্।
মধু এবং কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে জানেনা এমন লোক হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমরা সবাইই কমবেশি মধু এবং কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে জানি। তাই আমরা অনেকেই মধুর বিশেষ উপকারিতা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে মধু কিনি। কিন্তু সমস্যা হলো খাঁটি মধু পাওয়া খুবি দুষ্কর। ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, খাঁটি মধু পাওয়া আর সোনার হরিণ পাওয়া একি কথা। তাই আপনাদের এই সমস্যার সমাধানের জন্য আজকে আমি আপনাদের সাথে আছি মধু আল-আমিন।
আরও পড়ুনঃ মধু জমে গেলেই কি সেইটা ভেজাল মধু? আসুন জেনে নিই মধুর ব্যাপারে কিছু অজানা সত্য কথা
কালোজিরা ফুলের মধু কি?
আগে আমাদেরকে জানতে হবে যে, কালোজিরা ফুলের মধু কি? যেহেতু আমাদের দেশের মানুষ মধুর সম্পর্কে জ্ঞান খুবই কম তাই অনেকেই জানেন না কালোজিরা ফুলের মধু কি? বা কী ভাবে তৈরি হয় এবং এর উপকারিতা কি ও কোথায় পাওয়া যায়?
এক কথায় কালোজিরা ফুলের মৌসুমে, মৌমাছি কালোজিরার ফুল থেকে যেই নেকটার সংগ্রহ করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবে যেই মধু বানাই আমরা তাকেই কালোজিরা ফুলের মধু বলি।
কালোজিরা ফুলের মধুর বৈশিষ্ট্য
মধুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকলে আপনি যে মধু কিনছেন তা
খাঁটি না ভেজাল তা বুঝতে পারবেন না। তাই মধুর বৈশিষ্ট্য জানা খুবিই দরকার।
আমাদের মনে রাখতে হবে যে, একেক ফুলের মধুর একেক রকম বৈশিষ্ট্য থাকে। যেমনঃ স্বাদ, গন্ধ, রং ও ঘনত্ব এর বেশ পরিবর্তন থাকে। যেমনঃ লিচু ফুলের মধু, সরিষা ফুলের মধু, সুন্দরবনের মধু ইত্যাদি। সব ফুলের মধুরই আছে ভিন্ন ভিন্ন গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট্য। তাই কালোজিরা ফুলের মধুরও আছে ইউনিক কিছু বৈশিষ্ট্য।
স্বাদঃ আপনারা অনেকেই খেজুরের গুড় খেয়েছেন আশাকরি। এই কথাটি বলার কারণ হলো আপনি যদি কালোজিরা ফুলের মধু খান তাহলে বলবেন যে, গুড় এবং এই মধুর মাঝে কোনই পার্থক্য নাই। অর্থাৎ কালোজিরা ফুলের মধুর স্বাদ একদম খেজুরের গুড়ের মতো। তবে ভুলে গেলে চলবে না, মধু তো মধুই। সেটা কখনোই গুড় নই।
গন্ধঃ স্বাদ যেহেতু অনেকটা গুড়ের মতো তবে গন্ধ কিন্তু গুড়ের মতো না। বেশ আকর্ষণীয় এবং মনোমুগ্ধকর। আরেকটি জিনিষ মনে রাখতে হবে, আমাদের অনেকেই বলে থাকেন যে মধু খুব মিষ্টি। তাদের উদ্দেশে বলছি, জি ভাই মধু খুব মিষ্টি। কারণ
মধু চিনির থেকে ১ থেকে ১.৫ গুন বেশি মিষ্টি হতে পারে।
রংঃ কালোজিরা ফুলের মধুর স্বাদ প্রায় গুড়ের মতো এবং দেখতে কালার ও কিন্তু গুড়ের মতোই প্রায়। কালো কালো টাইপ এর।
ঘনত্বঃ এইটি স্পেসিফিক ভাবে বলা কঠিন। মধুর ঘনত্ব ডিপেন্ড করে পারিপার্শ্বিক আবহাওয়া, তাপমাত্রা, মধু পরিপক্ব কি না এবং মৌচাষির উপরে। তবে আমাদের দেশে যে মধু বিক্রি হয় তা সাধারণত ১৮% থেকে ২৫% পর্যন্ত জলীয় উপাদান থাকে। অনেক সময় কিছু কম বেশ হয়। জলীয় উপাদান যত কম হবে মধু তত ঘন হবে।
এই আর্টিকেলটি পড়ার পাশাপাশি
tasmanbd.com লিখিত আরেকটি আর্টিকেল পড়তে পারেন। এতেকরে আপনি আরও বেশি সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
কালোজিরা ফুলের মধুর উপকারিতা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কালো জিরা ‘সাম (মৃত্যু)’ ব্যতিত সকল রোগের ঔষধ। (পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন / গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ) / অধ্যায়ঃ ৬৩ / চিকিৎসা (كتاب الطب) / হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৫)
আশাকরি কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের ভালই জানা আছে তাই আর দ্বিতীয় বার বলে সময় নষ্ট করছি না। যেহেতু কালোজিরার উপকারিতা খুব অসাধারণ তাই কালোজিরা ফুলের মধুর উপকারিতাও খুব অসাধারণ হবে এইটাই স্বাভাবিক।
আলহামদুলিল্লাহ্, আমি দীর্ঘদিন যাবত মধু নিয়ে গবেষণা করে যে অবিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে এবং মধু বিক্রি করার পর সম্মানিত ক্রেতাদের থেকে যে ফিডব্যাক পেয়েছি তার আলোকে বলতে পারি, প্রতিটি খাঁটি মধুই উপকারী কিন্তু কালোজিরা ফুলের মধুর উপকারিতা অন্যান্য মধুর তুলনাই বেশি থাকতে পারে।